কবিতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
কবিতা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

শেষ চিঠিটা

শেষ চিঠিটা লেখা হয়ে গেলে, আবার যখন লিখতে হয়
ঠিক তখনি ছলকে উঠে মৃত্যু এবং বাঁচার ভয়
মুন্ডুখেকোরা বেঁচে থাক তবে
নতমুখো প্রেম যাক কবরে
শরগোলে ভরা বিশ্ব-মাঝারে, আড়ালে থাকুক সেই কারিগর
যার কারুকাজ ললাটে তোমার, না থাক তাহার তার কোনো ঘর
চাপাতির কোপ গলায় জড়িয়ে
মৃত্যুতে সে যাক হারিয়ে

   

তিলের প্রহর

চিবুকের কাছে লুকিয়ে রেখেছো তিল
চিম্বুক পাহাড়ে নেচে ওঠা হরিণের তিল,
সেই তিলের প্রহর
যেনো বহু দিন পর, ফের
বিষাদের জানালা ছুঁয়ে গেলো

অনুধাবন

নিজেকে হত্যা করছি একের পর এক
একের পর এক নিজেকে হত্যা করে খুঁজছি
পরবর্তী নিঃশ্বাস, অমল অম্ল শ্বাস
চোখের পাতায় বিবাগি বকের মতো বিষাদ
বসে থাকে; বসে আছে জগতের সমুদয় চাপ
যারা এসেছিলো, তারা চলে গেছে সব
উপচানো নদীটাও যেন জমানো বরফ
বরফের পথ ধরে হাঁটি আর খুঁজি
শুধু কিছু বাঁচার বাতাস

হাঁস

ডানায় ধারণ করে পুরোটা আকাশ
একটি হাঁস, ধবল, শাদা হাঁস এক
ভেসে যাচ্ছে
উড়ে যাচ্ছে
দূর থেকে দূরে বুকে খয়েরি পালকের হাঁস যাচ্ছে
বদলে যাচ্ছে আকাশের রঙ
মেঘগুলো কখনো সেতার, কখনো গিটার
তারপর যে যার মতো
আকাশ আর হাঁস
অস্পষ্ট, অদৃশ্য নিঃশ্বাস

ঘুমের শহরে

ঘুমের শহরে প্রবেশ করেছি আজ
প্রবেশ করেছি ঘুমের স্থাপত্য ঘেরা শহরে
এখানে সব কিছুই ঘুম
থাকার জায়গাগুলো সব ঘুমের নামে নাম
রেস্টুরেন্ট কিংবা পানশালা, ঘুম ছাড়া সবই অচল
সবুজাভ ঘুম, জল আর হাওয়া বয়ে যায় শহরে
এমন পরিচ্ছন্ন ঘুমের শহরে আমি আজ অতিথি
একটি সেমিনার
একটি বইমেলা
একটি কবিতা পাঠের আসর
আমি জানি, কোথাও আমি ঘুম থেকে বেরুতে পারবো না
কয়েকটি ঘুমনদী আছে শহরে, আমি জানতাম
সবগুলো ছুঁয়ে যাওয়ার সময় বের করেছি
আহা! আমি আজ ঘুমের শহরে

আমিও পুরুষ

ওগো নারী, আমিও পুরুষ
দূরে থেকে আমিও তোমাকে দেখি
দেখি আর কেমন কেমন লাগে
যেন একটা চুপচাপ পুকুরের জল নড়েচড়ে উঠে 
সেই নড়াচড়া যে বুকের ভেতর
তরঙ্গের অস্থিরতা দিয়ে যায় না, না বলবো না
শিশির ঝরে
বর্ষার অঝোর ধারায় মনে হয় বেজে যায় গান
কুয়াশা আসে আর যায়
হঠাৎ চৈত্রের বাতাসে এলোমেলো ঝরাপাতা
বসন্ত বসন্ত বলে টোকা দিয়ে যায়
আমি তখনো দূরে থেকেই দেখি
মেলার ভীড়ে, বৈশাখের মঙ্গলযাত্রায়
পশু-পুরুষদের তাকানোর চোখ নেই কেনো
তাদের কি হৃদয় নেই?
শিশির, কুয়াশা বা মেয়েটির মায়াবী মুখ তারা কেনো দেখে না
আমি তো দেখি, সেই কবে থেকে দেখছি, আজো দেখি

নিঃশব্দে আঙুলের ডগায় ঘাস থেকে তুলে আনি শিশিরের ফোঁটা  

আমাকে ডেকো ঘাস নামে

আমি আমার নাম রেখেছিলাম ঘাস
আমি বলতাম;
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে।
আবার আরেকটা নাম রাখলাম আজ; গ্রিস।
আমাকে ডেকো ঘাস নামে, ডেকো গ্রিস নামে

অনুধাবন

ঘুম থেকে জেগে দেখি খুন হয়ে গেছি কারা কারা যেন আমার কব্জি দিয়ে বানানো কাবাবের দিকে তাকিয়ে কাঁটাচামচ খুঁজছে কব্জির পাশে ওয়াইনে ভিজিয়ে রেখেছে আমার স্বপ্নকাতর চোখ যেন চোখ দুটো মুখে পুরলেই, আমার স্বপ্ন ইনস্টল হয়ে যাবে ঘাতকদের চোখে খুলিটা ডিপ ফ্রিজে রেখে দিয়েছে; পরবর্তী ভোজের পরিকল্পনায় আমার স্নেহাষ্পদ ঘাতকেরা আমার হৃদয় ধরে টানাহেচড়া করেনি আর আমি নিহত হয়েছি, আমার কব্জি-চোখ-মগজ ওদের দখলে; ওদের কাছে এতটুকুই হয়ত ব্যাস্ তারপর তুমি আমার হৃদয়টাকে মাশরুমের মতো কেটে টুকরো টুকরো করে জিরো ফ্যাট ম্যায়োনিজ দিয়ে বানিয়েছো সালাদ

পথ হারানো চাঁদ

আমার সাথে এখানে আজ, পথ হারালো আধখানা চাঁদ
আমি হারিয়ে ফেলেছি আমার শহর
আমি হারিয়ে ফেলেছি আমার বিহঙ্গ-মন্দ্র স্বর
আমার নিরবতাই আহা যেন এক সেতার
হারিয়ে ফেলেছি আমি পথ হাঁটা স্বপ্নের শহর
আমার অস্থিরতায় আজ, যেন বাজে দূর্বা দলের ঘাস

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

হাসপাতাল সিরিজ: ২

সমবেত ঘাসফুল 
মন খারাপ করা হেমন্ত সন্ধ্যার শিশির,
আজ বইমেলার পরিবর্তে
শব্দ বাক্য অক্ষরের পরিবর্তে
আমরা আমাদের কেটে ফেলা আঙ্গুল
দুভাগ হওয়া মাথার খুলি, চোয়াল
রাজিব অভিজিৎ অনন্ত নীল
মেঝেতে শুকিয়ে থাকা দীপনের রক্ত আজ
আপনাদের চক্ষু, অন্তর্চক্ষুর সমীপে
আপনাদের বেদনার মর্মমূলে
হেমন্তের বইমেলার পরিবর্তে
এই উদ্বোধনের মঞ্চে
এই শূন্য মাইক্রোফোনের সামনে
পাবলিক লাইব্রেরির দেয়ালে দেয়ালে
পাতার মর্মরে
রাজপথে শাহবাগে
দেখুন, দয়া করে আপনারা শুধু দেখুন

হাসপাতাল থেকে

হেমন্তের রাতে
কয়েক হাত দুরে
মর্গে দীপন
জরুরী ওয়ার্ডের স্বর্গে
আমরা তিনজন

The Bookseller

http://www.thebookseller.com/tags-bookseller/ahmedur-rashid-chowdhury