আমি আমার চিন্তার চর্চা শুরু করেছিলাম একটা লিটল
ম্যাগাজিন প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে।তখন আমি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমি খুব ছোট
বয়স থেকেই পত্রিকা পড়তাম। হাতের কাছে যে বই থাকতো তাই পড়তাম। স্কুলের শেষ সময়টাতে
আমি প্রচুর ইসলামি ধর্মীয় বই পড়ে ফেলি। এমনকি ধর্মের সাথে রাজনীতির সংশ্লিষ্টতা
বিষয়ে আমি তখন অনেক কিছু জানতে পারি। আমি সেই সময়টাতেই খুব সচেতনভাবে খেয়াল করলাম
যে, অদৃশ্য ও নিরাকার একজনকে নিজের স্রষ্টা ভেবে জীবন যাপন করার যে নীতি বা
ফর্মুলা তাতে করে মানুষ হিসাবে স্বাধীনতা, স্বতস্ফুর্ততা কোন কিছুই থাকে না। আমার
কাছে মনে হয়েছে , মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনের সাথে কথিত স্রষ্ঠার নিয়মকানুন
শুধু সংঘর্ষই টেনে আনে। এইসময় আমি দুএকটা কবিতাও লিখেছিলাম এরকম চিন্তাভাবনা নিয়ে।
তারপর আমি একসময় শুদ্ধস্বর থেকে বই প্রকাশ করা শুরু করলাম। তখন আমার মাথায়
ছিল বই পড়ানোর মাধ্যমে কিভাবে মানুষের চিন্তার সংকীর্ণতা দূর করা যায়। কিভাবে ধর্মের
অসংগতিগুলো সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা যায়। মানুষের মনে বিজ্ঞানচেতনার বিকাশ এবং
জীবন সম্পর্কে প্রশ্ন করার আকাঙ্খা তৈরি করে যে সব বই ,সেগুলো প্রকাশ করার
ব্যাপারে আমি বেশি আগ্রহী ছিলাম। তাছাড়া শিল্প ও সাহিত্যের অন্যান্য মাধ্যম বিষয়েও
প্রচুর বই প্রকাশ করেছি আমি।
বই প্রকাশ করাকে আমি শুধু মাত্র ব্যবসা হিসাবে দেখি না।
এটি আমার কাছে একধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনও বটে। শুদ্ধস্বরের একটা শ্লোগান
আছে, মন যোগাতে নয়, মন জাগাতে। আমি এখনো মনে করি, বাংলাদেশ বা পৃথিবীর অন্য যে কোন
জায়গার মানুষকে ধর্মিয় গোড়ামি ও সামাজিক কুসংস্কার থেকে মুক্ত করার জন্য শিক্ষা
এবং বইপড়া সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখতে পারবে। এক্ষেত্রে ভগত সিং সম্পর্কে পাঠ ও চর্চা
পৃথিবীবাসিকে মুক্ত জানালার সন্ধান দিবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন